মারণ জিন বা লিথাল জিন (Lethal Gene) : অনুপাত ২: ১
যেসব জিন হোমোজাইগাস অবস্থায় উপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট জীবের মৃত্যু ঘটে সেসব জিনকে লিথাল জিন বলে।
লিথাল জিনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Lethal Gene):
১. লিথাল জিন একধরনের মিউট্যান্ট জিন (mutant gene) যা প্রকট বা প্রচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে।
২. প্রকট লিথাল জিন হোমোজাইগাস বা হেটারোজাইগাস উভয় অবস্থায়ই জীবের মৃত্যু কিংবা আঙ্গিক বৈকল্য ঘটাতে পারে।
৩. জাইগোট বা ভ্রূণ অবস্থায় জীব মারা যায় বলে লিথান জিনের প্রভাব চোখে পড়েনা, তবে কোনো ক্ষেত্রে জীবের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর প্রকাশ ঘটে।
৪. লিথাল জিনের প্রভাবে ৩ : ১ অনুপাতের পরিবর্তে ২ : ১ অনুপাত প্রকাশিত হয়।
জিনতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা (Genetic explanation):
ধরা যাক, ইঁদুরের গায়ের হলুদ বর্ণের লোমের জন্য দায়ী প্রকট জিন Y এবং অ্যাগাউটি বর্ণের লোমের জন্য দায়ী প্রচ্ছন্ন জিন y.
মেন্ডেলের সূত্র অনুযায়ী বিশুদ্ধ বা হোমোজাইগাস হলুদ বর্ণের ইঁদুরের জিনোটাইপ হবে YY এবং বিশুদ্ধ অ্যাগাউটি বর্ণের ইঁদুরের জিনোটাইপ হবে yy. কিন্তু প্রকৃতিতে যে সব হলুদ বর্ণের ইঁদুর পাওয়া যায় তার কোনটিই বিশুদ্ধ বা হোমোজাইগাস (YY) জিনোটাইপধারী নয়। কারণ Y জিন হোমোজাইগাস অবস্থায় লিথাল জিন হিসেবে কাজ করে ভ্রুণ অবস্থায় ইঁদুরের মৃত্যু ঘটায়। তাই প্রকৃতিতে যেসব হলুদ বর্ণের ইঁদুর পাওয়া যায় তারা সবাই হেটারোজাইগাস অর্থাৎ সংকর (Yy) প্রকৃতির।
লিথাল জিন (Lethal Gene):
যে সব লিথাল জিনের প্রভাবে ৫০% এর বেশি জীব মারা যায় সেগুলোকে সেমিলিথাল জিন (semilethal gene) বলে। অন্যদিকে, যেসব লিথাল জিনের প্রভাবে ৫০% এর কম সংখ্যক জীব মারা যায় সেগুলোকে সাবভাইটাল জিন (subvital gene) বলে। মানুষে হিমোফিলিয়া রোগ সৃষ্টিকারী লিথাল জিন সেমিলিথাল ধরনের। ড্রসোফিলা মাছির লুপ্তপ্রায় ডানা সৃষ্টিকারী লিথাল জিন সাবভাইটাল ধরনের।
আরও দেখুন...